রাতের খাবারের পর ব্যায়াম

হজমের জন্য খাওয়ার পর ব্যায়াম করুন: আজকাল সবাই বাসা, অফিস এবং ক্যারিয়ারের মধ্যে এতটাই আবদ্ধ যে নিজের জন্য সময় পায় না। এটি স্বাস্থ্যেও প্রভাব ফেলে। সুস্থ থাকার জন্য শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা খুবই জরুরি, বিশেষ করে খাবার খাওয়ার পর। প্রায়শই লোকেরা খাবারের পরপরই বসে কাজ করে বা ঘুমাতে যায়। এ কারণে খাবার ঠিকমতো হজম হয় না, পরিপাকতন্ত্রও দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই আপনি যদি সবসময় সুস্থ থাকতে চান, তাহলে খাবার খাওয়ার পর 15-20 মিনিট নিজের জন্য সময় নিন। এই সময় নিজেকে সক্রিয় রাখুন, হাঁটুন। এটি খাবার হজম করতে সাহায্য করে।

খাবার খাওয়ার পর খাবার হজম করার জন্য ব্যায়াম করা খুবই জরুরি। তবে সবসময় খাওয়ার পর হালকা ব্যায়াম করা উচিত। ভারী ব্যায়াম বা ওয়ার্কআউট এড়িয়ে চলতে হবে। খাবার খাওয়ার পর হালকা ব্যায়াম করতে পারেন। এতে আপনার খাওয়া খাবার সঠিকভাবে হজম হবে। এছাড়াও আপনার গ্যাস, বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকবে না।

রাতের খাবারের পর ব্যায়াম

দুশ্চিন্তা দূর করার ব্যায়াম

1. হাঁটা
হাঁটাও এক ধরনের ব্যায়াম। এমনকি এটি দিয়ে আপনি শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকতে পারেন। তাই খাবার খাওয়ার পর সবসময় হাঁটার পরামর্শ দেওয়া হয়। খাবার খাওয়ার পর হাঁটলে খাবার হজম করা সহজ হয়। পরিপাকতন্ত্রে তেমন চাপ পড়ে না। খাওয়ার পর হাঁটলে গ্যাস, বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা এড়ানো যায়। আপনি খাবার খাওয়ার পরে 15-20 মিনিট হাঁটতে পারেন।

2. প্রশাসনিক ভঙ্গি/Admintine pose
খাবার খাওয়ার পর প্রশাসনিক ভঙ্গিতেও বসতে পারেন। প্রশাসনিক ভঙ্গিতে বসে খাবার সহজে হজম হয়। খাবার খাওয়ার পর এটিকে সেরা ব্যায়াম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অ্যাডমিনটাইন পোজ শরীরের উপরের অংশ এবং পেটের পেশীগুলিকে প্রসারিত করে, শ্বাসকে শিথিল করে। এই ব্যায়াম ভঙ্গি খাদ্য হজম প্রচার করে।

এই ভঙ্গিতে বসতে হলে প্রথমে পা সোজা করে বসুন। এর পরে, আপনার পা হাঁটু থেকে বাঁকিয়ে পিছনের দিকে সরান। এই সময়, আপনার পা নিতম্বের নীচে থাকবে। আপনার পিঠ একেবারে সোজা রাখুন। এবার হাত হাঁটুর ওপর রাখুন, দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিন। এই ব্যায়ামের ভঙ্গিতে 10-15 মিনিটের জন্য বসুন।

3. মূল ব্যায়াম/Core Exercise
যাইহোক, খাবার খাওয়ার পরে ব্যায়াম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। খাওয়ার পর পেট ফাঁপা, পেটে ব্যথার সমস্যা অনুভব করলে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে কোর ব্যায়াম করতে পারেন। এটি পেশীগুলিকে শক্তিশালী করে তোলে, এটি মলত্যাগকে সহজ করতেও সহায়তা করে।

4. সুখাসন/Sukhasana
সুখাসনে বসেও খাবার হজম করতে পারেন। তবে খাওয়ার পরে, একজনকে 5-10 মিনিটের জন্য সুখাসনে বসতে হবে। এর পর হাঁটতে হবে। এতে আপনার শরীরে এনার্জি লেভেল বাড়বে। এর সাথে আপনি সক্রিয় থাকবেন এবং পেটের রোগও দূরে থাকবে।

বজ্রাসন

5. বজ্রাসন
রাতের খাবারের পরে বজ্রাসন অন্যতম সেরা যোগাসন। এই আসনটি প্রধানত শরীরের উপরের অংশ এবং পেট প্রসারিত করার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, যা আপনার শ্বাস-প্রশ্বাসকে শিথিল করে এবং হজমে সাহায্য করে। এই আসনটি রাতের খাবারের পরে সহজেই করা যেতে পারে, কারণ এটি হজমশক্তি বাড়ায়।

যোগব্যায়ামের এই ভঙ্গিটি করার জন্য, আপনাকে আপনার উভয় পা বাঁকিয়ে নিতম্বের উপর রাখতে হবে। আর হাত হাঁটুর উপর রাখুন। আপনার পিঠ সোজা রাখুন এবং একটি গভীর শ্বাস নিন। কমপক্ষে 10-15 মিনিটের জন্য এই যোগ ভঙ্গিতে থাকুন।

বজ্রাসন এর পদ্ধতি ও উপকারিতা

6.গোমুখাসন (গরু মুখের ভঙ্গি)

গোমুখাসন হজমে সাহায্য করে এবং খাওয়ার পর আপনার পেট সারিয়ে তুলতে পারে। এটি আপনার মেরুদণ্ড এবং পেটের পেশীগুলিকে নমনীয় করতে সাহায্য করে, যা হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে।

প্রথমত, আপনাকে আপনার বাম পা নিতে হবে এবং আপনার গোড়ালিটি বাম নিতম্বের কাছে রাখতে হবে। তারপর আপনার ডান পাটি নিয়ে বাম পায়ের উপর এমনভাবে রাখুন যাতে উভয় পায়ের উভয় হাঁটু একে অপরকে স্পর্শ করে। আপনার উভয় হাত ব্যবহার করুন এবং আপনার পিঠের পিছনে রাখুন যাতে ডান হাত বাম হাতের সাথে মিলিত হয়। এটি করার সময় আপনার পিঠ সোজা রাখতে ভুলবেন না। কমপক্ষে 30 সেকেন্ড থেকে 1 মিনিটের জন্য এই যোগব্যায়াম ভঙ্গিতে থাকুন।

7.ধনুরাসন
ধনুকের ভঙ্গি আপনার হজম অঙ্গগুলির কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি সহজ করার জন্য, আপনি আপনার পেটে শুয়ে থাকতে পারেন এবং আপনার পা বাঁকতে পারেন। পিছনে পৌঁছানোর চেষ্টা করুন এবং আপনার বাহু এবং হাত ব্যবহার করে গোড়ালি ধরুন। আপনার শরীর বাড়ানোর পরিবর্তে, আপনার গোড়ালিগুলি আপনার পিছনে রাখুন। যতদূর সম্ভব আপনার কাঁধ টানুন।

খাবার খাওয়ার সাথে সাথে কখনই বসে থাকা বা শুয়ে পড়া উচিত নয়, কারণ এটি পরিপাকতন্ত্রের উপর চাপ সৃষ্টি করে এবং এটি দ্রুত খারাপ হতে শুরু করে। খাবার খাওয়ার পর অবশ্যই তা হজম করার জন্য হালকা ব্যায়াম করতে হবে। এর ফলে পরিপাকতন্ত্র সবসময় সুস্থ থাকে। আপনি হজম সংক্রান্ত সমস্যার সম্মুখীন হবেন না। খাওয়ার পর যেকোনো ব্যায়াম করার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

মন্তব্য করুন