বাচ্চাদের ভালো খাওয়ার অভ্যাস: বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ে। আমাদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের শরীরে সংক্রমণ ও রোগ মারাত্মক আকার ধারণ করে। এসব রোগ এড়াতে স্বাস্থ্যকর খাবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ডায়েটের সাহায্যে আপনি অনেক ধরনের শারীরিক সমস্যা এড়াতে পারেন। কিন্তু ডায়েটের প্রভাব তাৎক্ষণিকভাবে দেখা যায় না। শৈশবে ভাল খাদ্যাভ্যাসের প্রভাব সারাজীবন আপনার সাথে থাকে। শৈশবে স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নিতে শেখার মাধ্যমে একজন মানুষ ত্বক ও শরীরের নানা সমস্যা থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারে। একজন অভিভাবক হিসেবে, শৈশবেই বাচ্চাদের ভালো খাদ্যাভ্যাসের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া আপনার কর্তব্য। শিশুরা যদি সঠিক এবং ভুল খাওয়ার মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারে তবে তাদের স্বাস্থ্যকর খাবারের বিকল্পগুলি বেছে নিতে কোনও সমস্যা হবে না।
শিশুদের মধ্যে স্বাস্থ্যকর খাওয়ার অভ্যাস কিভাবে গড়ে তুলবেন?
1. বাচ্চাদের সাথে খাবার খান
শিশু এবং পিতামাতার অভ্যাস একে অপরের মতো। কারণ শিশুরা আপনাকে দেখেই সবকিছু শিখে যায়। এর একটি উদাহরণও এই যে, যেসব পরিবারে নিরামিষ খাবার রান্না করা হয় সেসব পরিবারের শিশুরা নিরামিষভোজী হয়ে ওঠে, যেখানে আমিষ খাবার খাওয়া পরিবারের শিশুরাও আমিষভোজী হয়ে যায়। শিশুদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাবা-মায়ের অভ্যাস চলে আসে শিশুদের মধ্যে। একসাথে টেবিলে বসে শিশুকে খাওয়ান। আপনাকে স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে দেখে তাদেরও স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে অনুপ্রাণিত করবে।
2. ছবির বইয়ের সাহায্য নিন
শিশুদের স্বাস্থ্যকর খাবার পছন্দ করতে শেখাতে ছবির বইয়ের সাহায্য নিন। ছবির বইগুলির বিশেষত্ব হল যেগুলিতে উপস্থিত আকর্ষণীয় ছবিগুলি মনে গভীর ছাপ ফেলে। কার্টুন ও অ্যানিমেশনের সাহায্যে শিশুকে ভালো খাদ্যাভ্যাস শেখানো যেতে পারে। অনেক কার্টুনে শিশুদের স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস শেখানো হয়। তাদের সাহায্যে, শিশুকে কীভাবে সঠিকভাবে খেতে হবে, স্বাস্থ্যকর এবং অস্বাস্থ্যকর খাবারের মধ্যে পার্থক্য, কীভাবে সঠিক পরিমাণে খেতে হবে ইত্যাদি শেখানো যেতে পারে।
3. বাচ্চাদের প্লেটে অনেক রঙিন খাবার রাখুন
পুষ্টিবিদদের মতে, প্লেটে যদি রংধনুর মতো বিভিন্ন রং থাকে, তাহলে প্লেটটিকে বলা হবে স্বাস্থ্যকর। একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্যের সংজ্ঞা অনেক রঙের একটি খাদ্য অন্তর্ভুক্ত। শিশুর প্লেটে বিভিন্ন ধরণের খাবার এবং বিভিন্ন পছন্দের অফার করুন। যেমন শিশুকে ফল দই, সবজির টিক্কিসহ আরও অনেক রঙের খাবার খেতে দিন। এর মাধ্যমে শিশুর মধ্যে টেস্ট বাডও গড়ে উঠবে।
4. শিশুদের প্লেট শৈল্পিক করুন
শিশুদের প্লেটে এই ধরনের আকার যোগ করুন, যা শিশুদের আকর্ষণ করে। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি বাচ্চার জন্য সাধারণ রোটি আকর্ষণীয় করতে চান তবে বিভিন্ন আকারে রোটি তৈরি করুন। যেমন তারার আকৃতি, পশুর মুখ, হাসিমুখ ইত্যাদি এই উপায়ে শিশুরা আনন্দের সাথে খাবার খাবে। বাচ্চাদের জন্য বিভিন্ন রঙের প্লেট এবং কাপ আনুন। রঙ এবং আকার নিয়ে খেলা শিশুর মধ্যে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে পারে।
5. সন্তানের প্রিয় খাবারের একটি স্বাস্থ্যকর সংস্করণ তৈরি করুন
বাচ্চারা করলার রস বা বোতল করলার স্যুপ পান করবে বলে আশা করবেন না। কোন খাবার বেশি স্বাস্থ্যকর তার ভিত্তিতে শিশুরা খাবার বেছে নিতে শিখতে পারে না। তবে বাচ্চাদের স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া উচিত, এর জন্য আপনি স্বাস্থ্যকর উপায়ে তাদের পছন্দের খাবারটি তৈরি করতে পারেন। বাচ্চারাও বার্গার খেতে পছন্দ করে। তাদের স্বাস্থ্যকর বার্গার খাওয়ানো খুব সহজ। সবজি স্টাফ করে বার্গার বানানোর বদলে প্যাটিতে ম্যাশ করা সবজি যোগ করুন। এর মাধ্যমে শিশুরা স্বাস্থ্যকর উপায়ে তাদের পছন্দের খাবার খেতে শিখতে পারবে।