প্রায় অনেক জায়গায় স্বর্ণলতা লতার আকারে মোড়ানো দেখা যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি বাবলা বা বের গাছে মোড়ানো হয়।স্বর্ণলতা ডাল ও বীজ আয়ুর্বেদিক ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আসুন জেনে নিই স্বর্ণলতার ঔষধি ব্যবহার এবং এর উপকারিতা কি।
চুলের যত্নে স্বর্ণলতা
টাক নিরাময়
টাক দূর করতে স্বর্ণলতা সর্বোত্তম ঔষধি ব্যবহার। টাক দূর করতে স্বর্ণলতাকে তিলের তেল দিয়ে পিষে এই পেস্টটি নিয়মিত মাথায় মালিশ করতে থাকুন। নতুন চুল আসা শুরু হবে এবং চুল পড়া কমে যাবে। চুল মজবুত ও ঝলমলে করতে ৫ গ্রাম স্বর্ণলতা পিষে আধা লিটার পানিতে ফুটিয়ে ঠাণ্ডা হলে চুল ধুয়ে ফেলুন। এই রেসিপি খুবই কার্যকরী।
চোখের ফোলাভাব কমাতে সহায়ক
15 থেকে 20 মিলিগ্রাম স্বর্ণলতার রসে সামান্য চিনি মিশিয়ে এই পেস্টটি চোখে লাগান। এতে চোখের ফোলা ভাব দূর হবে এবং চোখের লালভাবও কমবে।
ডায়াবেটিস রোগীদের অবশ্যই এই ওষুধ খেতে হবে
এই ওষুধটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। প্রতিদিন ৫ গ্রাম স্বর্ণলতার বীজের গুঁড়ো খেলে চিনির মাত্রা কমে যায়। ডায়াবেটিস রোগীদের প্রতিদিন এটি খাওয়া উচিত।
মস্তিষ্ক সংক্রান্ত সমস্যা দূর হবে
টেনশন বা মাথাব্যথা থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিন সকালে জলের সাথে 10 থেকে 20 গ্রাম স্বর্ণলতার ক্বাথ খান। এতে মস্তিষ্ক সংক্রান্ত অন্যান্য সমস্যাও সেরে যাবে।
যোনি রোগ নিরাময়ে সহায়ক
যোনিপথের রোগ নিরাময়ে স্বর্ণলতা খুবই কার্যকরী। অমরবেলের পেস্ট যোনিপথে লাগালে যোনিপথের রোগ সেরে যায়।
রক্ত পরিশোধক হিসেবে কাজ করে
স্বর্ণলতা রক্ত পরিশোধনে খুবই কার্যকরী একটি ওষুধ। 4 গ্রাম তাজা স্বর্ণলতার ক্বাথ গরম জলের সাথে পান করলে রক্ত বিশুদ্ধ হয়, যা অন্যান্য রোগ প্রতিরোধ করে। এটি ত্বককেও সুন্দর করে তোলে।
পাইলসের আয়ুর্বেদিক ওষুধ
পাইলসের সমস্যা দূর করতেও স্বর্ণলতা ব্যবহার করা যায়। 10 গ্রাম স্বর্ণলতা রসে কালো গোলমরিচের গুঁড়া মিশিয়ে নিয়মিত সকাল-সন্ধ্যা সেবন করুন। পাইলস কয়েকদিনের মধ্যে সেরে যাবে এবং এর সাথে শরীরের অন্যান্য ফোলাভাবও দূর হবে। রক্তাক্ত ডায়রিয়ার সমস্যা থাকলেও এই রেসিপিটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
চুলকানির সমস্যা দূর করে
চুলকানির সমস্যা সারাতে স্বর্ণলতা খুবই উপকারী। চুলকানি জায়গায় আমড়ার পেস্ট লাগালে চুলকানি সেরে যায়।
স্বর্ণলতা দিয়ে মাথা ঘষে, এর জল দিয়ে চুল ধুয়ে নিন বা সেবন করুন। আপনার চুল সিল্কি এবং ঘন হয়ে উঠবে…
অমরবেল আমরলতা বা আকাশবেল প্রাকৃতিক চুলের বৃদ্ধির জন্য একটি কার্যকর ভেষজ
‘স্বর্ণলতা’ চুলের জন্য আশীর্বাদ, প্রাণহীন চুলে দেয় নতুন জীবন
চুল ঘন করতে স্বর্ণলতা ব্যবহার
চুল ঘন, ঘন ও ঝলমলে করতে চুল ধোয়ার সময় ব্যবহার করতে হবে অমরত্বের পানি। এই জল কীভাবে প্রস্তুত করবেন তা এখানে শিখুন।
আপনার প্রায় 50 গ্রাম স্বর্ণলতা অর্থাৎ ইমরটেল দরকার। এবার এই লতার কান্ড ও পাতা ১ থেকে ১.৫ লিটার পানিতে রান্না করুন। পানি ফুটে উঠলে আঁচ বন্ধ করে দিন। তারপর পানি ঠান্ডা হয়ে গেলে চুল ধোয়ার সময় সবশেষে এই পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
এটি করলে আপনার চুল অমরত্বের গুণাবলীর পুষ্টি পায়। এটি শুধুমাত্র আপনার চুলকে ঘন এবং ঘন করে না বরং এটিকে শক্তিশালী এবং চকচকে করে তোলে।
মাথার চুলকানির সমস্যায় উপকারী
অনেক সময় এমন সমস্যা হয় যে কোনো কারণ ছাড়াই মাথায় প্রচুর চুলকানি হয়। মাথার ত্বকে জ্বালাপোড়ার কারণে এটি ঘটে। সাধারণত আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় বা চুলের সঠিক পরিচর্যার অভাবে মাথার ত্বকের পিএইচ পরিবর্তন হয় এবং চুলের গোড়ায় চুলকানির সমস্যা শুরু হয়।
মাথার ত্বকের জ্বালাপোড়ায় স্বর্ণলতার পেস্ট লাগান
– যখনই আপনি মাথায় চুলকানির সমস্যায় ভুগছেন, তখন আপনি আমড়াবেল অর্থাৎ স্বর্ণলতা পিষে পেস্ট বানিয়ে চুলে লাগাতে পারেন।
শুধু চুলে নয়, শরীরের কোনো অংশে চুলকানির সমস্যা যদি আপনাকে বারবার বিরক্ত করে এবং আপনার কোনো চর্মরোগ না থাকে, তাহলে অমরত্বের পেস্ট লাগাতে পারেন। আপনি প্রথম থেকেই আরাম অনুভব করবেন।
স্বর্ণলতা এত অকার্যকর কেন?
স্বর্ণলতার সমস্ত উপকারিতা যা আপনাকে এখানে বলা হয়েছে তা জানার পরে, আপনার মনে অবশ্যই প্রশ্ন আসবে যে স্বর্ণলতায় কী ঘটে, যা এটিকে এত কার্যকরী লতা তৈরি করে।
তাই বলে রাখি ফ্ল্যাভোনয়েড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিনের পাশাপাশি অনেক উপকারী পুষ্টিগুণ পাওয়া গেছে অমরত্বে। বিভিন্ন গবেষণায় এটি প্রমাণিত হয়েছে যে আমলা সেবন হজম প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করে। এতে শরীরে পরিপূর্ণ পুষ্টি পাওয়া যায়।