আত্মহত্যার চিন্তা কখন এবং কেন মাথায় আসে?

You are currently viewing আত্মহত্যার চিন্তা কখন এবং কেন মাথায় আসে?
Image by Mohamed Hassan from Pixabay

গত কয়েক বছরে আমরা দেখেছি আত্মহত্যার হার বেড়েছে। এই তালিকায় অনেক পরিচিত ব্যক্তিত্বের নামও রয়েছে। আত্মহত্যা মানে নিজের জীবন শেষ করা। প্রশ্ন হল, মানুষ এত সহজে জীবন শেষ করে কেন? জীবনে সম্মুখীন হওয়া সমস্যাগুলো কি এত বড় বা গুরুতর যে সেসব সমস্যার কোনো সমাধান নেই? স্পষ্টতই, কেউ যদি আত্মহত্যা করে, তবে সে সাহস হারিয়েছে, তার মন আরও সংগ্রাম করার ইচ্ছাশক্তি হারিয়েছে। তাই সে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে আপনার মনে রাখা উচিত যে জীবনে যত সমস্যাই আসুক না কেন, সমস্যা যত বড়ই হোক না কেন, তাদের সবার সমাধান অবশ্যই থাকবে। তাই যদি কখনো আপনার মনে এমন নেতিবাচক চিন্তা আসে, তাহলে আপনার উচিত সেগুলিকে আপনার উপর আধিপত্য বিস্তার করতে না দিয়ে আপনার মনকে শক্তিশালী করুন এবং দৃঢ়তার সাথে আপনার সমস্যার মোকাবেলা করুন।

আত্মহত্যার চিন্তা বন্ধ করার আগে জেনে নেওয়া দরকার আত্মহত্যার চিন্তা কার মাথায় আসে? যে ছেলেমেয়েরা স্কুলে পরীক্ষায় পাশ করতে পারছে না, কৃষক যারা ঋণের বোঝায় তলিয়ে গেছে, যারা চাকরি পাচ্ছে না, তাদের মধ্যে আত্মহত্যার চিন্তা বেশি। কিন্তু মানুষের মনে এমন ভাবনা আসে কেন? এর একটি প্রধান কারণ হল যখন মানুষের সামনে কোনো পথ থাকে না, তাদের সমস্যা বেড়ে যায়, কেউ তাদের বোঝে না, তাদের পরিস্থিতি তাদের হাতে থাকে না। এমতাবস্থায় আত্মহত্যার চিন্তা মাথায় আসতে থাকে। পরিষ্কারভাবে আপনি এটাকে বিষণ্ণতাও বলতে পারেন। একজন মানুষ যখন ডিপ্রেশনে পড়ে, ডিপ্রেশনের মাত্রা অনেক বেড়ে যায়, তখন মানুষের মনে আত্মহত্যার চিন্তা আসে। এ ছাড়া কিছু মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন সাইকোটিক, যা আত্মহত্যাকে প্ররোচিত করে। এমতাবস্থায় স্বজনদের উচিত তাদের সাহায্য করা।

আত্মহত্যার চিন্তা কখন এবং কেন মাথায় আসে?

পরিস্থিতি মোকাবেলা কিভাবে
বন্ধুদের সাথে কথা বলুন: যখনই আপনার মনে এমন চিন্তা আসে যে জীবনে কিছুই অবশিষ্ট নেই এবং এটি শেষ করাই একমাত্র উপায়। এমন পরিস্থিতিতে দেরি না করে আপনার ঘনিষ্ঠ বন্ধু বা আত্মীয়ের সঙ্গে কথা বলুন। আপনার মনে যে চিন্তা আসছে তা উল্লেখ করুন। আপনার বন্ধুকে বলুন কেন আপনি এমন চিন্তা করছেন। আপনার মনের সমস্ত নেতিবাচক কথা তাকে বলুন এবং যতক্ষণ সম্ভব আপনার বন্ধুর সাথে কথা বলুন। যদি কেউ আপনার সাথে বাড়িতে থাকে তবে আপনি তার সাথেও আপনার চিন্তা ভাগ করতে পারেন।

আশা বজায় রাখুন: সবসময় মনে রাখবেন যে পরিস্থিতি যতই খারাপ হোক না কেন, পরিস্থিতি যতই অনিয়ন্ত্রিত হোক না কেন, তবে আশা কখনই হারানো উচিত নয়। যেমন, ধরা যাক আপনি এমন একটি পরিস্থিতিতে আটকে আছেন যেখানে মনে হচ্ছে সবকিছু শেষ হয়ে আসছে। এখন এর পর কি করা যায়? তবে মনে রাখবেন যে এই চিন্তার পরেও, কোনও না কোনও উপায় অবশ্যই বেরিয়ে আসে। কোনো কিছু আজ শেষ হলে আগামীকালও নতুন কিছু শুরু হতে পারে। এটাকে বলে আশা। যদি আশা থাকে, তাহলে নতুন করে শুরু করা সহজ হবে।

বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন: আপনি যদি মনে করেন যে আপনার পরিচিত কেউ আপনাকে সাহায্য করতে পারবে না বা আপনি আপনার সমস্যাটি কাছের কারো সাথে শেয়ার করতে চান না, তাহলে একজন বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন। বিশেষজ্ঞরা আপনাকে শুধুমাত্র সঠিক দিক নির্দেশনা দেখাতে সাহায্য করে না বরং আপনাকে ইতিবাচক উপায়ে জীবনযাপন করার উপায়ও দেখায় এবং গভীরভাবে জীবনের অর্থ ব্যাখ্যা করে।

সামগ্রিকভাবে, আপনার যদি কখনও আত্মহত্যার চিন্তা থাকে তবে বাড়িতে একা থাকবেন না। বাড়ি থেকে বের হন, কাছের মানুষদের কাছে যান, বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে যান। যদি কোনও কারণে আপনার আশেপাশে কেউ উপস্থিত না থাকে তবে একক ভ্রমণে যান। তবে যেকোনো জায়গায় যেতে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করুন। এভাবে আত্মহত্যার চিন্তা ঝেড়ে ফেলতে সাহায্য করবে।

মন্তব্য করুন