স্ক্রীন টাইম এবং শিশু: পুরানো দিনে, আমরা খেলনা দিয়ে খেলতাম, কিন্তু সময় বদলেছে এবং নতুন প্রযুক্তি শিশুদের হাতে খেলনা প্রতিস্থাপন করেছে। স্মার্টফোন, টিভি, ল্যাপটপের মতো গ্যাজেটগুলো অবশ্যই স্মার্ট, কিন্তু এগুলোর অতিরিক্ত ব্যবহার শিশুর জন্য সবদিক থেকেই ক্ষতিকর বলে বিবেচিত হয়। স্ক্রিন টাইম বৃদ্ধির কারণে শিশুরা অনিদ্রা, স্থূলতা, বিষণ্ণতা, দুর্বল দৃষ্টিশক্তি, স্নায়বিক অভিযোগ ইত্যাদির শিকার হয়। এমনও একটি সময় আসে যখন শিশুরা স্ক্রিন দেখার সময় পর্দার আসক্ত হয়ে পড়ে। তবে এক্ষেত্রে শিশুদের চেয়ে অভিভাবকদেরই বেশি দোষ। মা-বাবা সন্তানকে পর্দা দেন কিন্তু তা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে শেখান না বা নিজেও করেন না, এতে শিশুদের ওপর খারাপ প্রভাব পড়ে। এই প্রবন্ধে আমরা জানব বাবা-মায়ের কোন ভুলগুলো শিশুকে পর্দার প্রতি আসক্ত করে তোলে।
বাবা-মায়ের এই ভুল সন্তানকে পর্দার আসক্তির শিকার করে তুলতে পারে
1. প্রলোভন হিসাবে একটি শিশুকে স্মার্টফোন দেওয়া
বিশেষজ্ঞ ও পরামর্শদাতাদের মতে, শিশুকে কোনো কিছু থেকে দূরে রাখার জন্য প্রলুব্ধ করা ঠিক নয়। যদিও বেশিরভাগ অভিভাবক শিশুদের সাথে এই পদ্ধতিটি চেষ্টা করেন। বাচ্চারা যাতে তাদের আনুগত্য করতে পারে বা কোনও জেদ ছেড়ে দেয়, বাবা-মা তাদের ফোন ব্যবহার করতে বা টিভি দেখতে দেন। কিন্তু এই ধরনের শিশুরা পরবর্তীতে একগুঁয়ে হয়ে যায় এবং তখন বাধ্য হয়ে আপনাকে তাদের প্রতিটি কথা মানতে হবে। সন্তানকে ভালোবাসার সাথে বুঝিয়ে বলুন পর্দার ক্ষতির কথা। আপনার পয়েন্ট জুড়ে পেতে এই ধরনের লোভ দেওয়া তার স্বাস্থ্যের উপর একটি টোল নিতে পারে।
![ফোন বেশি ব্যবহার করা](https://bangaly.in/wp-content/uploads/2023/04/%E0%A6%AB%E0%A7%8B%E0%A6%A8-%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A6%BF-%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A6%BE-min-1024x536.webp)
2. ফোন বেশি ব্যবহার করা
আপনি নিজে যদি ফোন বেশি ব্যবহার করেন, তাহলে সন্তানকে ফোন থেকে দূরে রাখা কঠিন। শিশুরা আপনাকে দেখে ভালো বা খারাপ অভ্যাস শিখে। আপনি যদি সারাক্ষণ সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় থাকেন, বা সন্তানের সামনে ফোন ব্যবহার করেন, তাহলে শিশুও একই অভ্যাসের শিকার হবে। সন্তানকে পর্দা থেকে দূরে রাখতে নিজের সীমা নির্ধারণ করুন। বাচ্চারা যখন আশেপাশে থাকে, তাদের সময় দিন এবং ফোন একপাশে রাখুন।
3. স্ক্রীন টাইম সীমা সেট না করা
বেশিক্ষণ স্ক্রীনে দেখা শিশুদের জন্য ক্ষতিকর। অনেক বাবা-মা স্ক্রিন টাইম সেট করেন না এবং বাচ্চারা অনেকক্ষণ স্ক্রিন দেখে। একজন অভিভাবক হিসেবে, সন্তানের স্ক্রিন টাইম নিয়ন্ত্রণ করা আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমে নিশ্চিত করুন যে শিশু তার সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ যেমন খাওয়া, বাড়ির কাজ করা, পড়াশোনা বা অন্য কিছু অসম্পূর্ণ রেখে গেছে। এটা জানতে হলে শিশুকে বুঝিয়ে বলুন, তাকে কতক্ষণ ফোন ব্যবহার করতে হবে বা টিভি দেখতে হবে। বর্তমান সময়ে শিশুকে সব ধরনের পর্দা থেকে দূরে রাখা সম্ভব নয়, তবে শিশুদের পর্দার সময় কমানো যেতে পারে।
![বাচ্চাদের সাথে কথা বলুন](https://bangaly.in/wp-content/uploads/2023/04/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%9A%E0%A7%8D%E0%A6%9A%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%A5%E0%A7%87-%E0%A6%95%E0%A6%A5%E0%A6%BE-%E0%A6%AC%E0%A6%B2%E0%A7%81%E0%A6%A8-min-1024x536.webp)
4. সন্তানকে সময় না দেওয়া
যেসব শিশুর বাবা-মা তাদের সময় দেন না, তারা তাদের সময় কাটানোর জন্য নিজের উপায় খুঁজে নেন। কিন্তু সঠিক প্যারেন্টিং হল সেইটি যেখানে আপনি সন্তানকে সময় দেন। এটি ভাল অভিভাবকত্বের প্রথম পদক্ষেপ। শিশুকে নিজের উপর ছেড়ে দেওয়া যাবে না। শিশুকে সময় না দিলে সে এমন অভ্যাসের শিকার হবে যা দীর্ঘমেয়াদে তার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
5. শিশুকে কাজ করতে না পাওয়া
সন্তান বিরক্ত হলে বাবা-মা ফোন দেন। বা শিশুর মনকে সম্পৃক্ত করতে টিভি চালু করুন। এটা ভালো অভ্যাস নয়। ছোট বাচ্চাদের শক্তি বেশি থাকে, যা সঠিক জায়গায় ব্যবহার করা দরকার। শিশুকে ইনডোর এবং আউটডোর কার্যকলাপ করতে বলুন। অনেক মেমরি গেম আছে যা শিশুদের মনকে বিকশিত করবে যেমন দাবা বা সুডোকু ইত্যাদি।